বার্তা সংস্থা ইকনা: ইরানের জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা আইআরআইবি'র বহুল প্রচারিত দৈনিক 'জমেজাম' হাসান নাসরুল্লাহর একান্ত সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছে। সেখানে হাসান নাসরুল্লাহ'র ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবন নিয়ে নানা তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্ব সন্ত্রাসবাদের মূল হোতা ও মুসলমানদের প্রধান শত্রু ইহুদিবাদী ইসরাইল ও তার মিত্র দেশগুলো সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠনের নেতা হিসেবে অপপ্রচার চালালেও বিশ্বের স্বাধীনচেতা ও শান্তিকামী মানুষেরা হাসান নাসরুল্লাহকে চেনে মহাবীর ও শয়তানি শক্তির আতঙ্ক হিসেবে। ইহুদিবাদী ইসরাইল নানাভাবে তাঁকে হত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে এবং এখনও সব সময় তাঁকে হত্যার জন্য ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে হাসান নাসরুল্লাহ খুব কম জনসম্মখে আসেন এবং তাঁর সাক্ষাৎ পাওয়ার সৌভাগ্য খুব কম মানুষেরই হয়।
হাসান নাসরুল্লাহ গত ২৫ বছর ধরে এমন পরিস্থিতির মাঝেও হিজবুল্লাহর মতো বিশাল ও শক্তিধর সংগঠন পরিচালনা করছেন। অনেকেই মনে করেন তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা হয়তো এ ধরনের জীবনযাপনে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। আসলেই কি তাই?
এমন প্রশ্নের জবাবে সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেছেন-"মানুষ মাত্রই নিজেকে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়। আমার পরিবারের সদস্যরা এ পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদেরকে মানিয়ে নিয়েছে। আমার স্ত্রী এবং আমার সন্তানেরা এতে অভ্যন্ত হয়ে পড়েছে। সন্তানদের মধ্যে একজন এখন আমাদের সঙ্গে থাকে। বাকীরা বিয়ে করে আলাদা থাকে। কেউ কেউ মনে করেন, হাসান নাসরুল্লাহ খুব কঠিন জীবনযাপন করেন। উনি হয়তো ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। আসলে বাস্তবতা এমনটি নয়। আমি তাদেরকে বলবো, আপনারা আমাকে নিয়ে চিন্তা করবেন না। আমরা অনেক আগেই বিষয়টির সমাধান করে ফেলেছি। এখন সব কিছুই স্বাভাবিক মনে হয়। মানসিক দিক থেকেও আমরা অন্য সব মানুষের মতোই আছি।"
হিজবুল্লাহ মহাসচিব তার পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে 'জমেজাম' পত্রিকাকে বলেছেন, তিনি পাঁচ সন্তানের জনক। চার ছেলে ও এক মেয়ে। তবে এক ছেলে এরইমধ্যে শাহাদাৎবরণ করেছেন। শহীদ ছেলের নাম মোহাম্মাদ হাদি। জীবিত তিন ছেলের মধ্যে সবচেয়ে ছোট হচ্ছে মোহাম্মাদ মাহদি। তার বয়স প্রায় ১৬ বছর। সে এখনও পড়ালেখা করছে। অপর দুই ছেলের নাম মোহাম্মাদ জাওয়াদ ও মোহাম্মাদ আলী। তারা দুই জনই বিবাহিত এবং হিজবুল্লাহর সঙ্গে কাজ করে। মোহাম্মাদ জাওয়াদের চার জন এবং মোহাম্মাদ আলীর দুই সন্তান রয়েছে। আর মেয়ের নাম জয়নাব। মেয়ে বিবাহিত। তারও চার সন্তান রয়েছে। জামাতাও হিজবুল্লাহর সঙ্গে রয়েছে।
হাসান নাসরুল্লাহকে প্রশ্ন করা হয়েছিল হিজবুল্লাহর মহাসচিব না হলে কোন পেশাকে বেছে নিতেন তিনি। জবাবে নাসরুল্লাহ বলেছেন, হিজবুল্লাহর মহাসচিব না হলে শিক্ষক হতেন তিনি। তার পছন্দের খেলা হচ্ছে ফুটবল। তবে ফুটবল খেলার সুযোগ এখন আর তাঁর হয় না। কাজের চাপে ব্যায়ামের সুযোগও হয় কম। তবে সময় পেলেই ট্রেডমিল মেশিনের সাহায্যে ব্যায়াম করার চেষ্টা করেন সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ।