IQNA

যিয়ারাতে আশুরার গুরুত্ব ও ফজিলত

17:04 - September 28, 2017
সংবাদ: 2603940
শেইখ তুসী(রহ.) মিসবাহ গ্রন্থে হযরত ইমাম বাকের(আ.) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যক্তি যদি মহররম মাসের দশ তারিখে হযরত ইমাম হুসাইন(আ.)এর মাজার জিয়ারত করে এবং তাঁর পবিত্র মাজারের কাছে অশ্রুপাত করে, তাহলে কিয়ামতের দিনে তাকে এমন অবস্থায় প্রভুর সাক্ষাতে উপস্থিত করা হবে যে তার কৃতকর্মের হিসাবে দু'হাজার হজ্জ, দু'হাজার ওমরাহ্ ও দু'হাজার জিহাদের সওয়াব লেখা থাকবে।
যিয়ারাতে আশুরার গুরুত্ব ও ফজিলত
বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: এ সময় পুনরায় ইমামকে প্রশ্ন করা হল যে, এ সওয়াবের সৌভাগ্য তো কেবল কারবালার অধিবাসীরাই পাবেন। কারণ, যারা কারবালা নগরী থেকে দূরে অবস্থান করছেন তারা কিভাবে আশুরার দিনে ইমাম হুসাইন(আ.)এর মাজার জিয়ারত করে ঐ সওয়াবের অধিকারী হবেন?

উত্তরে ইমাম (আ.)বলেন: যারা কারবালা থেকে দুরে অবস্থান করছে তারা যেন কোন মরূদ্যানে (ফাঁকা মাঠে) বা নিজের বাড়ীর ছাদে উঠে ক্বাবামুখী হয়ে ইমাম হুসাইন(আ.)কে ইশারা করে সালাম দেয়,দরুদ পড়ে ও তাঁর শত্রুদের(খুনির) প্রতি অভিসম্পাত বা লানত করে এবং এরপর দু'রাকআত নামাজ পড়ে, (দুপুরে সূর্য হেলে পড়ার আগেই তা করা উত্তম)। এরপর নিজের ত্রুটি ও পাপগুলো স্মরণ করে তওবা করে এবং ইমাম হুসাইনকে(আ.)স্মরণ করে ক্রন্দন করে, একইসাথে বাড়ীতে উপস্থিত সবাইকে ক্রন্দনে উৎসাহ যোগায়।

এভাবে কেউ যদি নিজেকে ও নিজের বাড়ীর লোকদেরকে শোকার্ত করে তোলে তাহলে আমি নিশ্চিতভাবে উক্ত সওয়াব লাভের প্রতিশ্রুতি তাকে দিচ্ছি।

রাবী পুনরায় ইমাম বাকের(আ.)-কে প্রশ্ন করেন, আমরা পরস্পরকে কিভাবে সমবেদনা জানাব? তিনি বললেনঃ প্রভু ইমাম সাইন(আ.)-এর শোক-সভায় আমাদের জন্য সওয়াব ও পুরস্কারাদি রাখবেন। আর আমাদেরকে এবং আপনাকে ইমাম হুসাইন(আ.)-এর রক্তের প্রতিশোধ গ্রহণে, ইমাম মাহদী(আ.)-এর সাথীতে পরিণত করবেন।

যিয়রাতে আশুরায় আমরা ইয়াজিদ, তার বংশধর ও তার সাহায্যকারীদের উপর অভিসম্পাত করে বলি: হে প্রভু আমার অভিসম্পাতকে আহলে বাইত (আ.)’র উপর প্রথম অত্যাচারী জালিমের জন্য নির্ধারিত করে দাও, যে অত্যাচার দ্বারা সে অত্যাচারের সূচনা করেছিল । অতঃপর দ্বিতীয় অত্যাচারী, এরপর তৃতীয় অত্যাচারী, তারপর চতুর্থ জালিমের উপর [আমার অভিশাপ বর্ষণ কর]। হে প্রভু পঞ্চম ব্যক্তি ইয়াজিদের উপর অভিশাপ বর্ষণ কর । আব্দুল্লাহ বিন জিয়াদ ও ইবনে মারজানাহ, ওমর বিন সা'দ, শীমার, আলে আবু সুফিয়ান,আলে জিয়াদ,আলে মারওয়ান,এদের সকলের উপর কিয়ামত পর্যন্ত অভিশাপ বর্ষণ কর। অতঃপর সিজদায় অবনত হয়ে বলতে হবে ।

যিয়ারাতে আশুরায় ইমাম হুসাইন, তার পরিবার ও সাথীদের প্রতি সালাম দিয়ে আমরা বলি: হে আবা আবদুল্লাহ! আপনার প্রতি ও আপনার পবিত্র সত্তার প্রতি সালাম, যে সত্তা সমাধিত হয়েছে। আমার পক্ষ থেকে আল্লাহর সালাম অনন্তকাল ব্যাপী, যতদিন এই দিবা-নিশি  অবিচল আছে। প্রভু যেন এ জিয়ারতকেই আমার জীবনের শেষ জিয়ারতে পরিণত করে না দেন। ইমাম হুসাইন (আ.)-এর সন্তানগণ ও ইমাম হুসাইন(আ.)-এর সাথীদের প্রতি সালাম।

যিয়ারাতে আশুরার শেষ পর্যযায়ে আমরা বলি: হে প্রভু! আমি আপনার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি প্রকৃত কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনকারীদের ন্যায়। আহলে বাইত (আ.)-এর শোকে আমি যে শোকার্ত আমার এ আজাদারী ও শোকানুভুতিতে আল্লাহর প্রশংসা। হে প্রভু! যেদিন আপনার সম্মুখে দণ্ডায়মান হব সেদিন ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শাফায়াত আমার ভাগ্যে রাখুন। আর আপনার কাছে হুসাইন (আ.) ও তাঁর যে সকল সাথীরা খোদার পথে জীবন উৎসর্গ করেছে তাঁদের সাথে আমাকে আপনার কাছে সত্যে অবিচল রাখুন।  

captcha