IQNA

রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে সম্মেলন ডেকেছে জাতিসংঘ, বৈশ্বিক সংহতির আহ্বান

19:20 - October 17, 2017
সংবাদ: 2604092
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হাতে জাতিগত নিধনের শিকার রোহিঙ্গাদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে এবং তাদের আশ্রয়দানকারী বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের তিনটি সংস্থা।

বার্তা সংস্থা ইকনা: এই ইস্যুতে আগামী ২৩ অক্টোবর সম্মেলন ডাকা হয়েছে। সম্মেলনে বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গাদের কঠিন সময়ে বিশ্ব তাদের পাশে রয়েছে- সেই বার্তা প্রদানের জন্য আহ্বান জানানো হয়।
জাতিসংঘের সংবাদ সম্প্রচার সাইট ইউএস নিউজ সেন্টারের প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।
এক যুক্ত বিবৃতিতে জাতিসংঘ জানিয়েছে, শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি, জরুরি ত্রাণ সমন্বয়ক ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক লোকোক ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন বিষয়ক এজেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আওএম) এর মহাপরিচালক উইলিয়াম লেসি সুইং আগামী ২৩ অক্টোবর এ সম্মেলন করার পরিকল্পনা নিয়েছেন।
রাখাইনের সাম্প্রতিক সহিংসতায় পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ছয় লাখ ছুঁয়েছে। তাদের সহায়তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকার, স্থানীয় দাতব্য সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবক, জাতিসংঘ ও এনজিওগুলো কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু এই সহায়তাকে যথেষ্ট মনে করছে না জাতিসংঘ।
যুক্ত বিবৃতিতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তা, নিরাপত্তা ও মৌলিক আশ্রয় নিশ্চিতের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, অনেক স্থানে এখনো বিশুদ্ধ পানির সুবিধা ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই। এতে আশ্রয়গ্রহণকারী ও স্থানীয়দের উভয়ের জন্য বৃদ্ধি পাচ্ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। বিভিন্ন এনজিও সেখানে বড় ধরনের মহামারি দেখা দেওয়ারও আশঙ্কা করছেন।
এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ সম্প্রতি প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য ৪৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে।
সোমবার তিন সংস্থার যুক্ত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে তাদের সীমান্ত খুলে দিয়েছে। পালিয়ে আসা মানুষদের জন্য নিশ্চিত করেছে নিরাপত্তা আর আশ্রয়। রোহিঙ্গাদের প্রতি স্থানীয়দের দয়া ও ভালোবাসা আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।’
এবার জেনেভায় মানবাধিকার সমন্বয় সংস্থা (ওসিএইচএ), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ও জাতিসংঘের শরণার্থী কমিশন ইউএনএইচসিআর সম্মেলনে বসছে। ওই বৈঠকে বিভিন্ন দেশের সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করবে। দায়িত্ব ভাগ করে নেবে।
এরই মধ্যে সম্মেলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কুয়েত। তাদের দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সঙ্কট সারা বিশ্বের সরকারগুলোর কাছে দায়িত্ব পালনের সংহতি ও এই দায় ভাগাভাগি করে নেয়ার সুযোগ এনে দিয়েছে। এ লক্ষ্যে একটি জয়েন্ট রেসপন্স প্লান এরই মধ্যে হাতে নেয়া হয়েছে।
এদিকে, রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনী আবারো রোহিঙ্গা গ্রাম পোড়াচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। তাদের সহযোগী হয়েছে অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী, এমনকি স্থানীয় লোকজনও।
এই নিপীড়নের পর গত রবিবার থেকে নতুন করে এসব গ্রামের মানুষ বাংলাদেশে আসতে শুরু করেছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর আজ এক বিবৃতিতে এ কথা জানায়।
গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকটি চৌকিতে হামলার পর সেখানে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন শুরু হয়। ছয় সহস্রাধিক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের প্রায় অর্ধেক গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা এবং একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা রাখাইনে গণহত্যা চলছে বলে অভিযোগ করে। আরটিএনএন
captcha