IQNA

রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা সু চির সহযোদ্ধার

11:46 - October 20, 2017
সংবাদ: 2604115
আন্তর্জাতিক ডেস্কও: রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানের আশ্বাস দিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা করেছেন মিয়ানমারের সাবেক ছাত্রনেতা ও সুচির সহযোদ্ধা কো কো জি। চলতি বছরের শেষ নাগাদ তার নেতৃত্বে একটি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে বলে জাপানি সংবাদমাধ্যম এনএইচকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তিনি।

বার্তা সংস্থা ইকনা: সামরিক সরকারের পতনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী এই নেতা মনে করেন, সু চি একা রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান করতে সক্ষম নন। সঙ্কট নিরসনে মিয়ানমারে ‘জবাবদিহিতামূলক বহুদলীয় গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরেন ২০ বছর কারাভোগ করা এই ছাত্রনেতা।

আশির দশকে মিয়ানমারে উত্তাল ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা কো কো জি ২০১৫ সালের নির্বাচনে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি থেকে প্রার্থী হবেন বলে দলের মুখপাত্র জানিয়েছিলেন। সাবেক এই ছাত্রনেতা সেই সময় রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তিনি সু চির দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। তবে পরে তার প্রার্থিতা নিশ্চিত হয়নি।

চলতি সপ্তাহে নিপ্পন ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে জাপান গিয়েছিলেন কো কো জি। এসময় বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে মিয়ানমারের সংকট নিয়ে কথা বলেন তিনি। এনএইচকে দেয়া সাক্ষাতকারে সু চির এক সময়ের এই রাজনৈতিক সহযোদ্ধা জানিয়েছেন, এখনো আনুষ্ঠানিক ক্যাম্পেইন শুরু না করলেও এরইমধ্যে টোকিওতে থাকা মায়ানমারের নাগরিকদের মধ্যে সমর্থন আদায় করতে শুরু করে দিয়েছেন তিনি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নোবেল বিজয়ী অং সান সু চির পর কো কো জিই মায়ানমারের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ। তিনি ‘৮৮ জেনারেশ স্টুডেন্ট’ নামে একটি দলের মাধ্যমে পরিচিত হয়ে উঠেন। সামরিক সরকার পতনে তিনি অং সান সু চির সঙ্গে কাজ করেছেন। এই আন্দোলনের কারণে প্রায় ২০ বছর কারাবন্দি থাকতে হয়েছে তাকে। পাঁচ বছর আগে মুক্তি পাওয়া এই নেতা মনে করেন, অং সান সু চি একা এই সমস্যার সমাধান করতে পারবে না।

২০১৫ সালে নির্বাচনে জয় পায় সু চি’র নেতৃত্বাধীন দল। এনএইচকে দেয়া সাক্ষাতকারে কো কো জি বলেন, তার কাজ এখনো শেষ হয়নি। তিনি চান মায়ানমারে জনগণকে বিকল্প কিছু দিতে। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র মানেই বহুদলীয়। আমাদের গণতন্ত্রের প্রথম ধাপ শেষ হয়েছে। আমাদের জনগণও ভোটদানে উৎসাহী ছিলো।

কো কো জি বলেন, ‘আমাদের দেশের জন্য একটি জবাবদিহিতামূলক সরকার তৈরি করতে চাই।’ চলতি বছরের শেষ দিকেই নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণার পরিকল্পনা করছেন বলে জানান তিনি।

তার একজন সমর্থক মনে করেন, ‘আমি নিশ্চিত কো কো জি মায়ানমারের ভবিষ্যত নিয়ে কাজ করবে।’

রাখাইন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক সংস্থা নিধনযজ্ঞ বললেও মায়ানমারের সেনাবাহিনী বারবারই তা অস্বীকার করে এসেছে। দেশটির ডি ফ্যাক্টো সরকারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চিও বিষয়টি নিয়ে কোনো বক্তব্য দেননি। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে বরাবরই অস্বীকৃতি জানিয়েছে মায়ানমার সরকার। অং সান সু চি রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার কথা বললেও এই ব্যাপারেও স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।

তবে কো কো জি কথা বলেছেন নির্দিষ্ট করেই। তিনি বলেন, ‘তারা নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারে। এটা পাওয়ার পর তারা রাষ্ট্র থেকে সকল সুযোগ সুবিধা পাবে। সব নাগরিকই ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে রাষ্ট্রের কাছে সমান সুবিধা উপভোগ করবে।’

শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে যারা আইন লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এনএইচকে’র প্রতিবেদনে বলা হয়, কো কো জির নতুন দল কেমন করবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে নতুন এই গণতান্ত্রিক দেশে সু চিকে নিশ্চিতভাবেই চ্যালেঞ্জ জানাবে এই দল। আরটিএনএন
captcha