IQNA

ইসলামে ধর্মান্তরিতদের প্রথম রোজা পালনের অভিজ্ঞতা

23:28 - June 09, 2018
সংবাদ: 2605946
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: থেরেসা করবিন: আমার হৃদয় আমার সৃষ্টিকর্তা এবং আমার বোনদের জন্য ভালবাসায় পরিপূর্ণ ছিল, যারা প্রার্থনার জন্য আমাকে তাদের সঙ্গে নিয়েছিলেন।

 
বার্তা সংস্থা ইকনা: এটি ছিল রমজান মাস এবং মহান আল্লাহর কাছে থেকে পুরষ্কার লাভের সময়টি খুব দ্রুতই চলে যাচ্ছিল। আমার সহকর্মীরা এবং আমি সুযোগ হাতছাড়া না করার সিদ্ধান্ত নেই। আমরা রমজানের শেষ দশ দিনে মসজিদে গিয়ে সারা রাত প্রার্থনা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করি।

রোজা রাখার উদ্দেশ্য আমরা খুব ভোরে পর্যায়ক্রমে খাবার খেয়ে নেই। তারপর আমরা আগের বছরগুলোর রমজানের গল্প শেয়ার করি এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমার জন্য একত্রিত হই এবং এক সঙ্গে নামাজ আদায় করি, পৃথিবীব্যাপী নির্যাতিত আমাদের ভাই ও বোনদের জন্য এবং পৃথিবী ও আখিরাতের জীবনে সুখ লাভের জন্য তার কাছে প্রার্থনা করি।

১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে রোজা পালন এবং তারপর ইফতারের জন্য রান্না করা, সারা রাত ধরে নামাজের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা অনেকটা বোঝা চাপিয়ে দেয়ার মতো মনে হয়েছিল। কিন্তু এটি আমার জীবনের সবচেয়ে মধুর এবং সবচেয়ে প্রিয় সময়।

স্টেফানি সিয়াম: স্টেফানি সিয়ামের প্রথম রমজান তাকে যথার্থ মুসলিম হিসেবে বেড়ে ওঠতে সহায়তা করেছিল।

‘আমি যখন প্রথম মুসলিম হয়েছি, তখন আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা রোজাকে খাপ খাইয়ে নিতে আমাকে উৎসাহিত করেছিল। খুব শিগগিরই, আমি স্থানীয় একটি মসজিদ ঘনঘন যেতে শুরু করি।একজন নতুন মুসলিম হিসাবে, এটা ছিল আমার জন্য একটি সান্ত্বনাদায়ক পরিবেশ। কয়েকজন মুসলিম নারীর সঙ্গে আগে থেকেই আমার পরিচয় ছিল এবং তারা জানত আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি স্নাতকের ছাত্রী।

ফল সেমিস্টার শুরু হলে মসজিদ-সম্পর্কিত ইসলামিক স্কুলের একজন শিক্ষক ছয় সপ্তাহের মাতৃত্বকালীন ছুটি যান। আমাকে তার স্থানটি পূরণের জন্য বলা হলো এবং আমি তৎক্ষণাত এই প্রস্তাবে রাজী হয়ে যাই।

আমার প্রথম রমজানের সময়ে পাঠ্য বইয়ের অধিকাংশ কভারেজ দিতে হয়েছে। আমি স্বীকার করবো, আমি রমজানকে ভয় পেতাম। আমি পূর্বে কখনো ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা রাখিনি। কিছু না খেয়ে, এমনকি এক কাপ পানি পান না করে ৪ থেকে ৫ বছর বসয়ী বাচ্চাদের কিভাবে পড়াব? এটা ভেবে অস্থির হয়ে যাই।

কিন্তু এটাই শেষ ছিল না। আসলে আমি ধীরে ধীরে ইসলামের সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছিলাম। স্পষ্টতই আমি হিজাব পরিধান করিনি। আমি যখন ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পড়াতে যেতাম, তখন আমাকে হিজাব পড়তে হতো কারণ এটি প্রয়োজন ছিল। কিন্তু যেইমাত্র আমি মসজিদটি ছেড়ে আসতাম, সঙ্গে সঙ্গে আমার হিজাবও অদৃশ্য হয়ে যেত।

রমজান শুরু হলো। কিন্তু এটি নিয়ে আগে অহেতুক যে ভাবনা ছিল, তা দূর হয়ে গেল। যাইহোক, একটি বিষয় আমাকে কষ্ট দিতে লাগল। রোজা যতই শেষ হচ্ছিল, নিজেকে ততই অপরাধী মনে হচ্ছিল। মসজিদ ছেড়ে আসা মাত্রই আমার হিজাব খুলে ফেলা নিয়ে নিজেকে প্রশ্ন করতাম কিন্তু প্রথমে আমি কোনো উত্তর দিতে পারিনি। তারপর একদিন আমি এটা স্থায়ীভাবে পরিধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

আশ্চর্যজনকভাবে কেউ তা চিন্তা করেনি। আমি বলতে চাচ্ছি, আমার মুসলিম বন্ধুরা অত্যন্ত খুশি হয়েছিল। কিন্তু আমার অমুসলিম বন্ধুরাও যথেষ্ট খোলামনের ছিল এবং আমার হিজাব পরিধান নিয়ে তারা কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেনি। আসলে আমি সঠিক সিদ্ধান্তটিই নিয়েছিলা্ম।

রমজান শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি দিন গণনা করেছিলাম কেননা আমি আমার বন্ধুদের সঙ্গে ঈদ-উল-ফিতর উদযাপন আগ্রহী ছিলাম। কাকতালীয়ভাবে, একজন মুসলিম হিসাবে আমার প্রথম ঈদটি ছিল আমার ২৪তম জন্মদিন।

সুবহানাল্লাহ, আমার কাছে এটা ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি নিদর্শন। আমি সঠিক পথ বেছে নিয়েছি। অব্যাউট ইসলাম

captcha