IQNA

ইমাম মাহদীকে সাহায্য করার জন্য মা ফাতিমা থেকে শিক্ষা নিতে হবে

15:00 - July 01, 2018
সংবাদ: 2606107
হযরত ফাতেমা (সা.আ.) ছিলেন বিশ্বের সকল মুমিন ও মোমেনার জননী কেননা মহানবী (সা.) বলেছেন : আমি ও আলী এই মুসলিম উম্মতের পিতা। তাই নবী পত্নীগণ ও হযরত ফাতেমা (সা.আ.) মুসলিম উম্মাহর জননী। মা ফাতেমা (সা.আ.) পরকালে তাঁর অনুসারীদেরকে শাফায়াত করবেন এবং তিনি হলেন খাতুনে জান্নাত।

বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: মা ফাতেমা (আ.) বিশ্ববাসীর কাছে একটি নীরব প্রশ্ন রেখে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেছেন। যে প্রশ্নটির মধ্যে আমাদের প্রত্যেকের জন্যে অনেক শিক্ষার বিষয় রয়েছে। আর এ শিক্ষা যদি আমরা গ্রহণ করতে পারি তাহলে নিজের পরকালসহ আদর্শ সমাজ গড়ার শক্তি খুঁজে পাব। আর যদি ব্যর্থ হই তাহলে ইতিহাসের দু:খজনক অধ্যায়ের পুনরাবৃত্তির জাতায় নিষ্পেষিত হবে আমাদের জীবন ও জাতির ভবিষ্যৎ। ফলে আমাদের দুশমন ও ইবলিস শয়তানের রাজত্বের পরিধি বিস্তৃতি লাভ করবে এবং একই পথের পথিক মুমিনদের মধ্যে মতভেদ বৃদ্ধি পাবে।

মূলত: প্রশ্ন হল মা ফাতেমাকে (সা.আ.) এই অল্প বয়সে জীবন দিতে হল কেন ? কেন তাঁরা গৃহে হানা দেয়া হল? কেন তিনি ওসিয়াত করে গেলেন রাতের আধারে ও গোপন স্থানে দাফন করতে?

মহানবীর (সা.) ঐশী মিশন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও সেযুগে যে শয়তানী চক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল তার প্রমাণ সুরা তওবার ১০১ নম্বর আয়াতে মহান প্রতিপালক ফাঁস করে দিয়েছেন । মহান আল্লাহ বলেন :

وَمِمَّنْ حَوْلَكُمْ مِنَ الْأَعْرَابِ مُنَافِقُونَ وَمِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ مَرَدُوا عَلَى النِّفَاقِ لَا تَعْلَمُهُمْ نَحْنُ نَعْلَمُهُمْ سَنُعَذِّبُهُمْ مَرَّتَيْنِ ثُمَّ يُرَدُّونَ إِلَى عَذَابٍ عَظِيمٍ

তোমাদের চারপাশে থাকা মরুবাসীদের (আরবদের) মধ্যকার একটি দল হচ্ছে মুনাফিক এবং মদীনাবাসীদের মধ্যেও অনেকে কপটতায় সিদ্ধ। তুমি তাদেরকে চেন না। আমি তাদেরকে চিনি। অচিরেই আমি তাদেরকে দুইবার শাস্তি দেব। পরে তাদেরকে আরও বড় শাস্তির জন্য ফিরিয়ে আনা হবে।

অতএব মহানবীর যুগ থেকেই একটি দল সুসংগঠিত ভাবে মহানবীর ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। তারা সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। যারা মহানবীর পরবর্তীকালে ইসলামের ইতিহাসে মহানবীর আদর্শকে ভুলেগিয়ে একেরপর এক মহাবিপর্যয় ডেকে এনেছেন এবং বনি সাকীফার ঘটনা, মা ফাতেমার গৃহে আগুন দেয়ার ঘটনাসহ কারবালার ঘটনার মত অতিনিকৃষ্ট ঘটনাসমূহ ইতিহাসে সৃষ্টি করেছেন। যারা মা ফাতেমার সম্পত্তি বাগে ফাদাক ছিনিয়ে নিয়েছিল তাদের সকলের নেকাব তিনি উন্মোচন করে দিয়ে গেছেন।

সেই সত্য লুণ্ঠনকারীদেরকে মা ফাতেমা (সা.আ.) তাঁর বিভিন্ন পদক্ষেপ ও ছোট একটি ওসিয়াতের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে স্পষ্ট করে দিয়ে গেছেন। তৎকালীন যুগের কপট ও ভণ্ড নবীপ্রেমিক যারা গাদীরে খুমে রাসুলের ওসিয়াতকে , মা ফাতিমার বাগে ফাদাককে, আহলে বাইতের (আ.) সম্মানকে পদতলে পিষ্ট করেছিল তাদের সকলের মুখোশকে টেনে ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছেন। উন্মুক্ত করে দিয়েছেন তাদের নখরগুলোকে তারা যে কতখানি ভয়ানক ও হিংস্র ছিল তা তিনি স্পষ্ট করে দিয়ে গেছেন। ইসলামী ইতিহাসের সেই লুকায়িত চরম সত্যকে মা ফাতিমা (সা.আ.) আমাদের কাছে উন্মোচিত করে দিয়ে গেলেন তাঁর করুন শাহাদতের মধ্য দিয়ে।

কিন্তু প্রশ্ন হল মদীনায় বসবাসকারী, এত মুসলমান থাকা সত্তেও কেন মা ফাতিমাকে (সা.আ.) শহীদ হতে হল ?! কেন ইতিহাসের সর্বাধিক শক্তিশালী, জ্ঞানী, আবেদ মানুষের গলায় দড়ি বেঁধে টেনে নিয়ে যাওয়া হল ? কেন জনগণের পক্ষ থেকে আশানুরূপ কোন প্রতিবাদ আসেনি ?! কেন মা ফাতিমার (সা.আ.) গৃহে যেখানে আল্লাহর ওহী নাযিল হয়েছিল সেখানে আগুন জ্বালা হল ?! জানি না আমার প্রশ্নগুলো আপনারা বুঝতে পেরেছেন কি না ? প্রকৃত পক্ষে মা ফাতিমাই (সা.আ.) এপ্রশ্নগুলো আমাদের কাছে উত্তরের জন্যে রেখে গেছেন । তিনি চেয়েছেন তাঁর অনুসারীরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করবেন।

captcha