IQNA

ভারতে জাতীয় প্রতীক নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক

15:45 - July 13, 2022
সংবাদ: 3472124
তেহরান (ইকনা): ভারতের জাতীয় প্রতীক নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নতুন সংসদ ভবনের মাথায় যে অশোক স্তম্ভ (জাতীয় প্রতীক) সম্প্রতি উন্মোচন করেছেন সেটি আদি প্রতীকটি থেকে আকারে-প্রকারে অনেক আলাদা।
 
বিরোধীরা বলছে, নতুন প্রতীকটিতে হাঁ করে থাকা সিংহদের শ্বদন্ত দেখা যাচ্ছে। পরোক্ষভাবে তা মোদি সরকারের চরিত্রই ফুটিয়ে তুলছে।
 
এক টুইটে রাষ্ট্রীয় জনতা দল লিখেছে, সারনাথের মন্দিরের যে অশোক স্তম্ভকে ভারতের জাতীয় প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল, তার সিংহটি অনেক সৌম্য এবং শান্ত স্বভাবের। তুলনায় নতুন সংসদ ভবনের ওপরের নতুন অশোক স্তম্ভের মূর্তি হিংস্র। তাদের দেখে মনে হচ্ছে গিলে খেতে আসছে।
 
আরজেডি এ ব্যাপারে কেন্দ্রকে কটাক্ষ করে বলেছে, প্রতীককে সাধারণত চরিত্র বোঝাতেই ব্যবহার করা হয়। মোদি সরকারের নতুন প্রতীকেও তার চরিত্র স্পষ্ট।
 
প্রতীক-বিতর্কে কেন্দ্রের সমালোচনা করেছেন আইনজীবী ও সমাজকর্মী প্রশান্ত ভূষণও। সারনাথের সিংহকে তিনি মহাত্মা গান্ধীর মতো শান্ত এবং নতুন সংসদ ভবন সেন্ট্রাল ভিস্তার সিংহকে নাথুরাম গডসের মতো উগ্র বলে তুলনা করেছেন। টুইট করে প্রশান্ত লিখেছেন, এটাই মোদির নতুন ভারত!
 
নতুন অশোক স্তম্ভের সমালোচনায় যোগ দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। তবে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। শুধু টুইটারে পুরনো এবং নতুন প্রতীকের দু’টি ছবি পাশাপাশি শেয়ার করেছেন।
 
আম আদমি পার্টির রাজ্যসভার সদস্য সঞ্জয় সিংহ টুইট করে জানতে চেয়েছেন, ‘আমি ১৩০ কোটি ভারতীয়ের কাছে জানতে চাই, জাতীয় প্রতীক বদলে দেওয়ার এই চেষ্টা কি দেশদ্রোহ নয়!’
 
তৃণমূলের রাজ্যসভার সদস্য জহর সরকারও দু’রকম প্রতীকের ছবি শেয়ার করে বিবরণে লিখেছেন, ‘জাতীয় প্রতীকের অবমাননা। বাঁ দিকে আমাদের আসল প্রতীক। রাজকীয় অথচ কমনীয় সিংহ। মোদির সংস্করণটি অকারণ উগ্রতায় পরিপূর্ণ। অবিলম্বে এটি বদলানো দরকার। ’
 
তবে বিরোধীদের এই সমালোচনায় গুরুত্ব দেয়নি বিজেপি। তারা জানিয়েছে, বিরোধীরা কেন্দ্রের সমালোচনার একটি নতুন বিষয় খুঁজে পেয়েছে। এর বেশি কিছু নয়। অন্য দিকে, নতুন জাতীয় প্রতীকের শিল্পী সুনীল দেওরেও আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, তিনি কোনো উগ্র মনোভাব থেকে প্রভাবিত হয়ে ওই মূর্তি তৈরি করেননি। তিনি মূর্তিগুলো নিজের মনের মতো করেই বানিয়েছেন। তবে তার আগে সারনাথের আসল অশোকস্তম্ভটি নিয়ে গবেষণাও করেছিলেন।
 
সুনীলের যুক্তি, নেটমাধ্যমে বিরোধীরা যে ছবিটি দেখিয়ে আপত্তি তুলেছেন, সেটি ছবি তোলার কৌণিক অবস্থানের কারণে অন্যরকম দেখাচ্ছে। নিচ থেকে ছবি নেওয়ায় স্পষ্ট দেখাচ্ছে সিংহের শ্বদন্তগুলো। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
captcha