IQNA

ইউরোপে কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি বৈষম্য কেন? অথচ তারাই পশ্চিমের জন্য সস্তা শ্রমের উৎস

20:43 - April 07, 2024
সংবাদ: 3475309
ইকনা: পশ্চিমা দেশগুলো সমান অধিকারের দাবিদার হলেও ইউরোপের দেশগুলোতে অস্বেতাঙ্গ বিশেষ করে কৃষ্ণাঙ্গরা বছরের পর বছর ধরে গোপন ও প্রকাশ্য বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।

আফ্রিকা মহাদেশের অধিবাসীরা আধুনিক যুগের শুরু থেকে কিছু দিন আগ পর্যন্তও ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তির অধীনে ছিল। এ কারণে তারা এখনও পশ্চিমা উপনিবেশবাদের চাপিয়ে দেওয়া প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক কাঠামো, নিজস্ব পরিচয় এবং নিরাপত্তাগত সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি এবং এ কারণে তারা নিজস্ব মানবসম্পদকেও সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারছে না। বলা যায় নানান কৌশলে তাদেরকে বিভিন্ন দিক থেকে দুর্বল করে রাখা হয়েছে। ফলে অনেক আফ্রিকান মানুষ চাকরি খুঁজতে এবং জীবিকা অর্জনের জন্য ওইসব দেশে যায়। অবশ্য পশ্চিমের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সস্তা শ্রমিক নেয়ার জন্য নানাভাবে আফ্রিকানদেরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। পশ্চিমারা মানবাধিকার রক্ষার বিষয়ে বিভিন্ন চটকদার শ্লোগান দেয় কিন্তু বাস্তবে শ্লোগানের আড়ালে তাদের আচার আচরণে চরম বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়। যেমনটি আফ্রিকা থেকে আসা মানুষদের সাথে তাদের বৈষম্যমূলক আচরণের কথা উল্লেখ করা যায়।

আফ্রিকান নাগরিকদের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার পরিচালিত এক জনমত জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, তারা ব্যাপক বৈষম্যের শিকার। তারা কাজ, বাসস্থান ও স্বাস্থ্য পরিসেবা থেকে শুরু করে জীবনের সর্বস্তরে বৈষম্যের শিকার।

এই জনমত জরিপে অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, লুক্সেমবার্গ, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, স্পেন এবং সুইডেনে অবস্থিত আফ্রিকান বংশোদ্ভূত ৬৭৫২ জন কৃষ্ণাঙ্গ অংশগ্রহণ করেছিলেন যাদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ  আফ্রিকান ইউরোপীয়রা জাতিগত বৈষম্যের শিকার হয়েছে। এই হার ২০১৬ সালে ৩৯ শতাংশ থেকে বেড়ে  ৪৫ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে।

সমীক্ষায় আরো দেখা যায় যে, ইউরোপের দেশগুলোতে অনেক কৃষ্ণাঙ্গ অভিবাসীকে পুলিশ কঠোরভাবে তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং এদের মধ্যে অনেককে অপরাধ প্রমাণ না করেই পুলিশ মারধর করে।

এছাড়াও, ইউরোপীয় দেশগুলিতে কৃষ্ণাঙ্গরা চাকরি এবং সামাজিক যোগাযোগ ও সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিম্ন অবস্থানে রয়েছে এবং তাদের মধ্যে অনেকেই তাদের কাজের অবস্থান অনুসারে প্রাপ্য অধিকার পায় না।

এমনকি বিবাহের ক্ষেত্রেও, অনেক ইউরোপীয়রা তাদের সন্তানদেরকে কৃষ্ণাঙ্গদেরকে বিয়ে করতে নিষেধ করে। ফ্রান্সের একটি নতুন জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে যে ৪৬ শতাংশ ফরাসি নাগরিক উত্তর আফ্রিকান বংশোদ্ভূত কালোদের বিয়ে করার বিরোধী।

ব্রিটিশ কৃষ্ণাঙ্গ লেখক রেনি এডো লজ বলেছেন:

পাশ্চাত্যের বহু স্বেতাঙ্গ মানুষ মুখে বর্ণবাদের বিরোধিতা করলেও বাস্তবে

পাশ্চাত্যের প্রশাসনসহ সর্বস্তরে বর্ণবাদী কাঠামোর কারণে, এমনকি তারা কখনও কখনও নিজে থেকেই কালো মানুষদের থেকে আলাদা বলে মনে করে বা দূরত্ব বজায় রাখে।

এই প্রসঙ্গে, অধ্যাপক 'আহমদ হাঙ্কার' সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স পেজে দেয়া এক পোস্টে লিখেছেন:

'যুক্তরাজ্যে মানসিক স্বাস্থ্য আইনে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের আটক হওয়ার সম্ভাবনা চারগুণ বেশি। আমার মতে বর্ণবাদের বিষয়ে এই পরিসংখ্যান উদ্বেগ দূর করবে বলে মনে হয় না। #

 

captcha