IQNA

ইমাম হুসাইনের জন্য জিন, ইনসানই এবং জড় পদার্থও ক্রন্দন করে

14:22 - October 10, 2017
সংবাদ: 2604028
রাসূলের (সা.) প্রাণপ্রিয় নাতি ইমাম হুসাইনের (আ.) শাহাদতের কথা স্মরণ করে ক্রন্দন ও আযাদারি বিশেষ ফজিলত রয়েছে। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, কেয়ামতের দিন সমস্ত চক্ষু ক্রন্দনরত থাকবে, কিন্তু যে চক্ষু ইমাম হুসাইনের (আ.) জন্য ক্রন্দন করেছে সে চক্ষু ব্যতীত।
ইমাম হুসাইনের জন্য জিন, ইনসানই এবং জড় পদার্থও ক্রন্দন করে
বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেছেন: যদি কেউ ইমাম হুসাইনের (আ.) ক্রন্দন করে করে বিন্দু পরিমাণ অশ্রু বিসর্জন দেয়; তাকে সর্বোত্তম পুরস্কারে ভূষিত করার দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ। আর আল্লাহ তাকে বেহেশত প্রবেশ না করান পর্যন্ত সন্তুষ্ট হবে না।

আরও একটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, যদি কেউ ইমাম হুসাইনের (আ.) জন্য ক্রন্দন করে কিংবা কাউকে ক্রন্দন করায়; তবে সে বেহেশতে প্রবেশ করবে।

সাইয়েদুশ শোহাদা ইমাম হুসাইনের (আ.) ক্রন্দনের অর্থ সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অটলতা এবং মিথ্যা ও বাতিলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। কেননা ইমাম হুসাইন (আ.) ৬১ হিজরির মহররম মাসে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদের দু:শাসনের বিরুদ্ধে এবং পবিত্র ইসলাম ও কোরআনের শিক্ষাকে রক্ষার্থে নির্মমভাবে শাহাদত বরণ করেছেন।

আর অপরদিকে ইয়াজিদী চক্র ভেবেছিল ইমাম হুসাইনকে (আ.) শহীদ করতে পারলে তাদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত হবে। কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি ভিন্নরূপ ধারণ করে। ইমাম হুসাইনের (আ.) শাহাদতের পর মুসলমানরা তার শাহাদতের ইতিহাস স্মরণ করে নিজেদের ঈমানী চেতনাকে শানিত করে। কেননা তার শাহাদতের মধ্যে বাতিলের বিরুদ্ধে জিহাদ এবং সত্যের পথে অটল থাকার শিক্ষা রয়েছে।

এতোটা নির্মমভাবে ইমাম হুসাইনকে (আ.)-কে হত্যা করা হয়েছে যা বর্ণনা করলে অন্তর শোকের ছায়ায় নিমজ্জিত হয়। ইমাম হুসাইন (আ.) বেহেস্তের সর্দার (তিরমিযি) অথচ কারবালার ময়দানে দোজাহানের বাদশা নবী (সা.)-এর দৌহিত্রকে পানি পিপাসায় জর্জরিত করে হত্যা করা হয়। রাসূল (সা.) বলেছেন, যখন তোমরা কোন ছাগল/গরু জবাই করবে তখন তাকে পানি খাওয়াবে। কিন্তু, পাষণ্ডের দল হুসাইন (আ.)-এর সাথে এতটুকু মমতাও দেখায়নি। বর্ণনা হয়েছে ইমাম (আ.)-এর জামায় ১৯০ টি তরবারি, তীর ও বর্শার আঘাতের চিহ্ন ছিল।

ইমামের শাহাদতের পর বিশ্বনবী (সা.)’র স্ত্রী উম্মে সালামাহ (আ.)-কে কাঁদতে দেখে তাঁকে প্রশ্ন করা হয় এর কারণ সম্পর্কে। তিনি বলেন, স্বপ্নে দেখলাম আল্লাহর রাসূল (সা.)-কে, তাঁর মাথা ও দাড়ি ধুলায় মাখা। এ ব্যাপারে রাসূলকে (সা.) প্রশ্ন করায় তিনি বলেন, এইমাত্র আমি আমার হুসাইনের হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করেছি।

আশুরার দিন সূর্য কালো হয়ে গিয়েছিল। লাল আকাশে তারা দেখা যাচ্ছিল দিনের বেলায়। অনেকেই ভয় পাচ্ছিল যে হয়তো কিয়ামত শুরু হয়েছে। যে কোনো পাথর তুললে তার নিচে তাজা রক্ত দেখা যেত।

ইসলামী বর্ণনায় এসেছে, রাসূল (সা.) নিজে অলৌকিকভাবে ইমাম হুসাইন (আ.)’র পবিত্র রক্ত সংগ্রহ করেছেন এবং আল্লাহর দরবারে বিচার দিয়েছেন। আশুরার দিন কেঁদেছিল ফেরেশতাকুলও। মহান আল্লাহ এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেয়া হবে বলে ফেরেশতাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন। শাবিস্তান
captcha